Home
দেশী উদ্ভাবন
রোবট
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা তৈরি করছেন পানির নিচের রোবট, অংশ নেবে যুক্তরাষ্ট্রের রোবোসাব প্রতিযোগিতায়
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা তৈরি করছেন পানির নিচের রোবট, অংশ নেবে যুক্তরাষ্ট্রের রোবোসাব প্রতিযোগিতায়
Written by Engr. Samim Sarkar July 04, 2025 0
‘টেক অটোক্র্যাটস–বেঙ্গল সাব’ দলের সদস্যরা পানির নিচের রোবট নিয়ে কাজ করছেন বঙ্গোপসাগর বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অর্থনীতির কেন্দ্রবিন্দু হতে চলেছে, যেখানে গ্যাস ও খনিজ সম্পদ লুকিয়ে রয়েছে। এই সমুদ্র জয়ের লক্ষ্যে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের একটি দল তৈরি করছে ‘হাঙর’ নামে একটি বিশেষ রোবট। ‘টেক অটোক্র্যাটস–বেঙ্গল সাব’ নামের এই দলটি বিশ্বের মর্যাদাপূর্ণ আন্ডারওয়াটার রোবোটিকস প্রতিযোগিতা ‘রোবোসাব ২০২৫’-এ অংশ নেবে। রোবোসাব প্রতিযোগিতা প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার উলেট অ্যাকুয়াটিকস সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা স্বয়ংক্রিয় আন্ডারওয়াটার ভেহিকল (এইউভি) নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। এই প্রতিযোগিতার উদ্দেশ্য সমুদ্রবিজ্ঞান, রোবোটিকস এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বাস্তব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত করা। বাংলাদেশের দল ২০২৫ সালের রোবোসাব প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছে ১৫ সদস্যের ‘টেক অটোক্র্যাটস–বেঙ্গল সাব’ দল। এই দলে অষ্টম শ্রেণি থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা রয়েছেন। দলনেতা মিরাজ তাসলিম, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র, বলেন, “আমাদের দলে হাইস্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একসঙ্গে কাজ করছে। গত অক্টোবর থেকে আমরা ‘হাঙর’ রোবটটি তৈরি করছি। এটি ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। আগামী মাসে আমরা সেন্ট মার্টিনে এর ফিল্ড টেস্ট করব।” প্রকল্প ব্যবস্থাপক আন নাফিউ বলেন, “এটি আমাদের প্রথম অংশগ্রহণ। আমাদের লক্ষ্য একটি সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় এইউভি তৈরি করা, যা পানির নিচে স্বাধীনভাবে চলাচল ও কাজ করতে পারে।” ‘হাঙর’ রোবট ‘হাঙর’ রোবটটি রোবোসাবের ছয়টি ধাপ পূরণের জন্য তৈরি। দলের সদস্য রুবাইয়াত এইচ রহমান বলেন, “এই রোবট পানির নিচে বাধা অতিক্রম করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে। এটি লক্ষ্য শনাক্ত, বস্তু পরিবহন ও ফ্রেমের মধ্য দিয়ে সাঁতার কাটার মতো কাজ করতে পারে। আমরা সেন্ট মার্টিনে এটি পরীক্ষা করব, যাতে এটি সুইমিং পুলে সীমাবদ্ধ না থাকে।” কনিষ্ঠ সদস্য এ কে এম ফাইয়াজ, ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্র, বলেন, “এই রোবট শুধু প্রতিযোগিতার জন্য নয়, ভবিষ্যতে সমুদ্র ও নদী গবেষণা, খনিজ অনুসন্ধান, দুর্ঘটনায় উদ্ধার এবং দূষণ পর্যবেক্ষণে ব্যবহার করা যাবে। এটি ক্যামেরা ও সেন্সরের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে দূষিত এলাকা ম্যাপ করতে পারবে।” দলীয় প্রচেঞ্চা দলের উপদেষ্টা রাসেল আহমেদ বলেন, “এই প্রকল্প শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা ও দলগত দক্ষতা বাড়িয়েছে। ইলেকট্রনিকস, কোডিং ও মেকানিক্যাল ডিজাইনে তারা একসঙ্গে কাজ করছে। আমরা আশা করি, তারা আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে বাস্তব সমস্যার সমাধানে প্রস্তুত হবে।” কনিষ্ঠ সদস্য আহনাফ সাফওয়ান ইসলাম, অষ্টম শ্রেণির ছাত্র, বলেন, “আমি মেকানিক্যাল ডিজাইন, ডকুমেন্টেশন ও থ্রিডি মডেলিংয়ে কাজ করছি। টেস্টিংয়ের সময় সমস্যা শনাক্ত করার চেষ্টা করি।” দলটি পাইথন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অ্যালগরিদম ও বিভিন্ন সেন্সর ব্যবহার করে রোবটটি তৈরি করছে। রোবোসাবে এমআইটি, স্ট্যানফোর্ড, টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়, যা শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তিগত ও আন্তর্জাতিক দক্ষতা প্রদর্শনের সুযোগ দেয়। দলের সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন সুদীপ্ত মন্ডল (রুয়েট), মো. মাসরুল খান (কুয়েট), গাজী ফয়সাল জুবায়ের (কুয়েট), খন্দকার রেদওয়ানুর রহমান (রুয়েট), নাফিস হাবিব (মাস্টারমাইন্ড), আরিয়ান সিদ্দিক (আহসানুল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়), এবং ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের হাসিন ইসরাক চৌধুরী, শামীম আহনাফ তাহমিদ, সানজিদ রহমান, তানভীর রহমান, এ কে এম ফাইয়াজ, জারার মাহবির, মাহদী ইসলাম ও মুয়াজ ইবনে বাশার। বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি বিভাগের গবেষণা ও উদ্ভাবনী অনুদান থেকে কয়েকজন সদস্যের ভ্রমণ ব্যয়ের আংশিক অর্থায়ন করা হয়েছে। উপদেষ্টা হিসেবে রয়েছেন কুয়েটের যন্ত্র প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক গোলাম কাদের।
Subscribe to:
Post Comments
(
Atom
)
0 Comments:
Post a Comment