গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সৌরজগৎ পাড়ি দিচ্ছে এক রহস্যময় ধূমকেতু, যার উৎস ভিন্ন এক নক্ষত্র। প্রথমদিকে ধূমকেতুটির পরিচয় নিয়ে মতবিরোধ থাকলেও পরে বৈজ্ঞানিক গবেষণার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায়, এটি একটি আন্তনাক্ষত্রিক ধূমকেতু। ধূমকেতুটির নাম দেওয়া হয়েছে ৩আই/অ্যাটলাস।
গত মাসের শুরুতে চিলির অ্যাটলাস সার্ভে টেলিস্কোপে ধরা পড়ে এই অনন্য মহাজাগতিক বস্তুটি। বিজ্ঞানীদের তথ্য মতে, প্রায় ১২ মাইল প্রশস্ত এই ধূমকেতুটি প্রতি সেকেন্ডে ৩৭ মাইল গতিতে ছুটে চলেছে।
আগামী ৩০ অক্টোবর এটি পৃথিবী থেকে প্রায় ১৩ কোটি মাইল দূর দিয়ে অতিক্রম করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শুরুতে বিজ্ঞানীরা এটিকে একটি সাধারণ গ্রহাণু ভেবেছিলেন। তবে পরবর্তী বিশ্লেষণে দেখা যায়, এটি বরং একটি বরফে মোড়া ধূমকেতু, যা এসেছে আমাদের ছায়াপথ মিল্কিওয়ের একেবারে ভিন্ন অঞ্চল থেকে। এটি হতে পারে আমাদের দেখা সবচেয়ে প্রাচীন ধূমকেতু।
ধূমকেতুটির অস্বাভাবিক গতি ও কক্ষপথ নিয়ে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মধ্যে চলছে তুমুল আলোচনা। যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতিপদার্থবিজ্ঞানী আভি লোয়েব ধূমকেতুটিকে ঘিরে ভিন্ন এক মত দিয়েছেন। তিনি মনে করছেন, এটি হতে পারে ভিনগ্রহের কোনো প্রযুক্তি বা কৃত্রিম বস্তু, প্রাকৃতিক নয়। তার দল এই সম্ভাবনার প্রমাণ খুঁজতে এর গতি ও গতিপথ নিয়ে বিশ্লেষণ চালিয়ে যাচ্ছে।
এখনো পর্যন্ত ধূমকেতুটি পৃথিবীর জন্য কোনো হুমকি নয় বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। তবে এর আচরণ এবং উৎস নিয়ে গবেষণার মাধ্যমে মহাবিশ্বে প্রাণের সম্ভাবনা কিংবা ভিনগ্রহের প্রযুক্তি নিয়ে নতুন প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে এই ধূমকেতু।
এই ধূমকেতুর ওপর গবেষণা ভবিষ্যতে আমাদের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তু সম্পর্কে আরও গভীর ধারণা দিতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
0 Comments:
Post a Comment