মহাবিশ্বের দ্রুত সম্প্রসারণ নিয়ে বিজ্ঞানীদের নতুন আবিষ্কার


মহাকাশ ও মহাবিশ্বের অমীমাংসিত রহস্য উন্মোচনের জন্য দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করে আসছেন বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি একটি নতুন গবেষণায় বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, পৃথিবীসহ সমগ্র মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি মহাবিশ্বের একটি বিশাল ও রহস্যময় শূন্যস্থানের মধ্যে অবস্থান করছে। এছাড়াও, বিগ ব্যাং বিস্ফোরণের সময়ের তুলনায় বর্তমানে মহাবিশ্ব দ্রুতগতিতে সম্প্রসারিত হচ্ছে।

মহাবিশ্ব সম্পর্কে প্রচলিত তত্ত্ব অনুসারে, মহাকাশে পদার্থ মোটামুটি সমানভাবে বিন্যস্ত থাকার কথা। কিন্তু যুক্তরাজ্যের রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির এক সভায় উপস্থাপিত সাম্প্রতিক গবেষণায় ভিন্ন তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণাটি বিগ ব্যাংয়ের শব্দ তত্ত্বকে সমর্থন করে এবং দাবি করে যে, আমাদের শূন্যস্থানে থাকার সম্ভাবনা ১০ কোটি গুণ বেশি। এই গবেষণা অনুযায়ী, পৃথিবী, সৌরজগৎ এবং মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি একটি বিশাল রহস্যময় গর্তের মধ্যে আটকে থাকতে পারে।

বিজ্ঞানীদের মতে, বর্তমান মহাবিশ্বের সম্প্রসারণের হার প্রাথমিক মহাবিশ্বের তুলনায় প্রায় ১০ শতাংশ বেশি। এই অসঙ্গতিকে বিজ্ঞানীরা 'হাবল টেনশন' হিসেবে অভিহিত করেছেন। হাবল টেনশন ধারণাটি এসেছে 'হাবল ধ্রুবক' থেকে, যা মহাবিশ্বের বাইরের দিকে সম্প্রসারণের হার পরিমাপ করে। এই ধ্রুবকের মাধ্যমে ছায়াপথের মতো বস্তুর অবস্থান ও দূরত্ব নির্ধারণ করা হয়।

যুক্তরাজ্যের পোর্টসমাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানী ইন্দ্রনীল বণিক জানিয়েছেন, "বর্তমান সম্প্রসারণের হার প্রত্যাশার তুলনায় প্রায় ১০ শতাংশ বেশি। এটি যেকোনো মহাজাগতিক মডেলের চেয়ে বেশি এবং এটি একটি গুরুতর সমস্যা।" তিনি আরও বলেন, "সমগ্র মহাবিশ্বে এমন পার্থক্য পরিলক্ষিত হচ্ছে।"

গবেষণায় দেখা গেছে, মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি মহাবিশ্বের অন্যান্য এলাকার তুলনায় ২০ শতাংশ কম ঘনত্বের একটি শূন্যস্থানে অবস্থিত। মহাকর্ষ বলয়ের মাধ্যমে পদার্থ প্রান্তের দিকে টানা হচ্ছে, যার ফলে মনে হচ্ছে মহাবিশ্ব পৃথিবীর কাছে দ্রুতগতিতে সম্প্রসারিত হচ্ছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, মিল্কিওয়ে প্রায় এক শ কোটি আলোকবর্ষ বিস্তৃত একটি কম ঘনত্বের শূন্যস্থানের কেন্দ্রের কাছে অবস্থান করছে। এই শূন্যস্থান খালি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মহাকাশের বস্তুগুলো পৃথিবী থেকে অন্য সময়ের তুলনায় দ্রুত দূরে সরে যাচ্ছে।

সূত্র: ডেইলি মেইল

0 Comments:

Post a Comment

Designed by OddThemes | Distributed by Gooyaabi