ইলন মাস্কের মঙ্গল জয়ের পরিকল্পনা: স্বপ্ন না বাস্তবতা?

ইলন মাস্ক, স্পেসএক্স, টেসলা এবং এক্স (সাবেক টুইটার)-এর মালিক, দীর্ঘদিন ধরে মঙ্গল গ্রহে মানব বসতি স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনায় রয়েছেন। তিনি ২০৩০ সালের মধ্যে মঙ্গলে মানব উপস্থিতি নিশ্চিত করতে এবং ২০৫৪ সালের মধ্যে ১০ লাখ মানুষের বাসযোগ্য শহর গড়ার উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। তবে এই পরিকল্পনা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন জ্যোতিঃপদার্থবিদ অ্যাডাম বেকার ও লরেন্স ক্রাউস।

অ্যাডাম বেকার তাঁর নতুন বই মোর এভরিথিং ফরএভার-এ মঙ্গল অভিযানকে ‘অবাস্তব’ ও ‘বিজ্ঞানকল্পনা’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, “মঙ্গল গ্রহে বাতাসের অভাব, উচ্চমাত্রার বিকিরণ এবং চরম পরিবেশ মানুষের বসবাসের জন্য অপ্রতিরোধ্য বাধা। এমনকি পৃথিবীতে গ্রহাণুর আঘাত, পারমাণবিক বিস্ফোরণ বা জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিপর্যয়েও পৃথিবী মঙ্গলের তুলনায় অনেক বেশি বাসযোগ্য।” তিনি আরও যুক্তি দেন যে, ইলন মাস্ক ও জেফ বেজোসের মতো ধনী উদ্যোক্তাদের এই প্রচেষ্টা বৈজ্ঞানিক ও নৈতিকভাবে বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন।

একইভাবে, জ্যোতিঃপদার্থবিদ লরেন্স ক্রাউস মাস্কের পরিকল্পনাকে ‘লজিস্টিক দিক থেকে হাস্যকর’ এবং ‘বৈজ্ঞানিক ও রাজনৈতিকভাবে বিপজ্জনক’ বলে সমালোচনা করেছেন। তিনি মনে করেন, মঙ্গল গ্রহে বসতি স্থাপনের এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি ও সম্পদ এখনো অনেক দূরের বিষয়।

একসময় মহাকাশে উপনিবেশ গড়ার সমর্থক ছিলেন অ্যাডাম বেকার। কিন্তু মহাকাশের কঠিন পরিবেশ সম্পর্কে গভীরভাবে অধ্যয়নের পর তিনি এই ধারণার বিরোধিতা করছেন। তাঁর মতে, মঙ্গল গ্রহে মানব বসতি গড়ার পরিকল্পনা বর্তমানে অবাস্তব এবং অপ্রয়োজনীয়।

ইলন মাস্কের স্বপ্ন মঙ্গল গ্রহে মানব সভ্যতার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে, তবে সমালোচকদের মতে, এই লক্ষ্য অর্জনের পথে প্রযুক্তিগত, বৈজ্ঞানিক ও নৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো এখনো অতিক্রম করা সম্ভব হয়নি। মঙ্গল জয়ের এই উচ্চাভিলাষ কতটা বাস্তবসম্মত, তা নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।

0 Comments:

Post a Comment

Designed by OddThemes | Distributed by Gooyaabi